আরবি ও ইংরেজি বর্ণমালার উৎস একই?

শুনলে আশ্চর্য হবেন, আরবি ও ইংরেজি বর্ণমালার উৎস একই জায়গায়!

আপনি যদি আরবি বর্ণমালা পড়েন, ك (কাফ) ل (লাম) م (মিম) ও ن (নুন) একসাথে পাবেন। ইংরেজিতেও কিন্তু K L M N একসাথে! এটা কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়, আসলেই দুই ভাষার মধ্যে মিল আছে।

কথায় আছে, ভাষা একটা নদীর মতো। কেবল ভাষাই নয়, বর্ণমালাও নদীর মতো এঁকেবেঁকে চলে—কোথাও বাধা পেলে নিজের মতো করে পথ বানিয়ে নেয়।

ইংরেজি ভাষার কোনো নিজস্ব বর্ণমালা ছিল না, তাই তারা লাতিন হরফ ধার করে। আর লাতিন হরফ এই রূপ পেয়েছে রোমান সাম্রাজ্যে, তাই একে অনেকে রোমান হরফও বলে। উচ্চারণগত তফাৎ ছাড়া লাতিন আর ইংরেজি হরফে তেমন কোনো পার্থক্য দেখা যায় না। এই লাতিন হরফ এই রূপে এসেছে পুরানো ইতালীয় বর্ণমালা বিবর্তিত হয়ে, সেটা আবার এসেছে গ্রিক বর্ণমালা থেকে।

লেভান্তাইন সাগর পারে যে ফিনিশীয় জাতি বসবাস করত, তাদের সাথে গ্রিকদের যোগাযোগ ছিল। ভৌগোলিকভাবেও তাদের অবস্থান কাছাকাছি। গ্রিকরা এই ফিনিশীয়দের থেকে বর্ণমালার জ্ঞান অর্জন করে৷

এভাবে এদিক দিয়ে ফিনিশীয় > গ্রিক > পুরানো ইতালীয় > লাতিন হয়ে ইংরেজি বর্ণমালার জন্ম হয়। অন্যদিক দিয়ে ফিনিশীয় > আরামাইক > নাবাতীয় সূত্র ধরে আরবি বর্ণমালা বর্তমান রূপ লাভ করে। দুটোর উৎস যেহেতু এক, তাই এদের মধ্যে কিছুটা মিলও আছে।

আরবি ভাষায় এখন আলিফ বা তা যেই অর্ডারে সাজানো, প্রাচীনকালে এই পদ্ধতিতে লেখা হতো না। তখন লেখা হতো এভাবে : ا (আলিফ) ب (বা) ج (জিম) د (দাল), একে বলা হতো আবজাদ পদ্ধতি। লাতিন ও ইংরেজি বর্ণমালা সাজানো হয়েছে এভাবে : A B C D (লাতিন উচ্চারণ : আ বে কে দে)। এখানে C এর উচ্চারণ কেবল আলাদা। বাকি তিন বর্ণ একই রকম। এরপর প্রাচীন আরবিতে ق (কাফ)ر (রা) ش (শিন) ও ت (তা) একত্রে লেখা হতো। ইংরেজিতে Q R S T একসাথেই লেখা হয়।

তবে, একটা বিষয় স্বীকার করতেই হয়—বর্ণমালায় যতই মিল থাকুক না কেন, আরবি হরফের সৌন্দর্যই আলাদা। আরবি হরফকে কতভাবে কত ঢঙে যে লেখা যায়, যারা ক্যালিগ্রাফি করেন তারাই কেবল জানেন। একজন ক্যালিগ্রাফারের ক্যানভাসে আরবি প্রতি হরফ আর্ট হয়ে যায়। এই সৌন্দর্যকে রুম ও অফিসের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে খুব নিপুণভাবে ব্যবহার করা যায়।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *